মোটিভেশনাল স্পিকার/রাইটারদের প্রতি!
মোটিভেশন দেয়াটা কি এতটাই জরুরী?
‘আলগা মোটিভেশন’ দেওয়া পাব্লিকদের কথা শুনলেই আমার গা ভেতরে ভেতরে গরম হতে শুরু করে। আরে ব্যাটা, তুই নিজে জীবনে কী করতে পেরেছিস যা আমি ফলো করতে পারি?(অবশ্য তারা মোটিভেশনাল স্পিকার হতে পেরেছে; আর তা শুনে শুনে আমরাও মোটিভেশনাল স্পিকার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি!🙄)
জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, ”ভাই, আপনি কি নিজেই ব্যক্তিগত জীবনে সফল?”
আমার তো মনে হয়, সফল হওয়ার থেকে এই যুগে মোটিভেশনাল স্পিকার হওয়া লক্ষ্যগুণ বেশি সহজ! যে লোকটা নিজেই সারাজীবন পড়া চুরি করে এখন জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করেছে, তার কাছেও শুনবেন, ‘পড়াশোনা করে যে, গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে’! অথচ তার নিজেরই হয়তো ‘নুন আনতে পানতা ফুরায়’ অবস্থা!
এক্ষেত্রে অনেকেই জ্যাক মা, আয়মান সাদিক ভাইসহ আরও অনেকের উদাহরণ টেনে বলতে পারেন, তাহলে ওনারা কেনো মোটিভেশন দিয়ে যাচ্ছেন?(শুধু দু’জনের নাম বললাম; কারণ আমি হয়তো এর বেশি সত্যিকারের মোটিভেশনাল স্পিকারকে চিনি না। বেশিরভাগই মোটিভেশন দিয়ে জাস্ট টাকা কামানো আর পপুলারিটি বাড়ানোর ধান্দা করে!)
এর উত্তরে বলব, ভাই দুনিয়াটা একদম মোটিভেশনশূন্য করার কথা আমি বলছি না। জ্যাক মা কিন্তু শুরু থেকে মোটিভেশনাল স্পিকার না। আগে তার বিজনেস গ্রো করে বিশ্ব পর্যায়ে একটা অন্যতম আসনে তিনি নিয়ে গিয়েছেন তার শ্রম ও সাধনা দিয়ে। আয়মান সাদিক ভাইও তার টেন মিনিট স্কুলকে দেশের সর্বোচ্চ অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্মে পরিণত করতে পেরেছেন। সো, মোটিভেশন তাদের মুখ থেকেই মানায় যারা নিজেরা নিজেদের জীবনে অন্তত মোটামুটি সফল।
সফল ব্যক্তিরা যখন মোটিভেশন দেয়, তখন শ্রোতারা সেই স্পিকারের জীবনের সাথে সেই কথাগুলো রিলেট করতে পারে। বাস্তব জীবনে সেই উপদেশ/পরামর্শগুলোর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে। সেই সাথে তার নিজের জীবনে সেগুলো ইমপ্লিমেন্ট করার ইচ্ছা তার মধ্যে জাগ্রত হওয়ার একটা সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
তাই বলছি ভাই, আলগা মোটিভেশন দেয়া বন্ধ করুন! বরং নিজেই নিজের মোটিভেশনগুলো কাজে লাগিয়ে নিজেকে সফলতার যতটুকু উচ্চতায় নেয়া যায়, তুলে নিন।
দেখবেন, পাবলিককে মোটিভেশন দেয়া লাগবে না।
পাবলিক আপনাকে দেখে এমনিতেই মোটিভেটেড হয়ে যাবে। (অবশ্যই যে নিজে থেকেই মোটিভেশন খোঁজার চেষ্টা করে, কেবল সে-ই)
আর যারা পুরো ইন্টারনেট জুড়ে শুধু মোটিভেশনাল স্পিচ খোঁজে, দিনশেষে দেখবেন, সে ঐ মোটিভেশনাল স্পিচ শুনে শুনেই তার বাপের টাকায় কেনা ইন্টারনেট প্যাকেজ নষ্ট করছে।
সো, লুক অ্যাট ইয়োরসেলফ ফার্স্ট!
আমি জানি, আমার এই পোস্টটাও হয়তো মোটিভেশন ভেবে কেউ কেউ আমাকেও গালি দিতে আসবে। হেহেহে।
কিন্তু বিশ্বাস করুন, কোনও রকম মোটিভেশন দেওয়ার জন্য এই পোস্ট আমি করিনি। বেশ কিছুদিন থেকে ইন্টারনেট জগতের বেশ কিছু জায়গায় দেখছি অনেক মোটিভেশনাল স্পিকার ফ্রীতেই মোটিভেশন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের বেশিরভাগই আমার মনে হয়েছে ইন্টারনেটের পোকা (আমি নিজেও কিন্তু ছোটখাট পোকা নই😎)। অথচ তারাই হাজারো পাবলিককে মোটিভেট করার চেষ্টা করছে। আরে ব্যাটা, তুই নিজে আগে তোর ইন্টারনেট আসক্তি দূর করে দেখা দেখি! তারপর না হয় তোর মোটিভেশন শুনে ফলো করার চেষ্টা করব!
যেহেতু মোটিভেশন দেওয়ার কোনও ইচ্ছেই আমার নেই, তাই পোস্টটি এই পর্যন্তই।
চাইলে অধমের ফেসবুক প্রোফাইল ভিজিট করে আসতে পারেন।
Dressed Human