মাথা ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা
মাথাব্যথা অত্যন্ত সাধারণ একটি ব্যাপার- বেশিরভাগ মানুষই আজকাল এধরনের সমস্যায় বেশি ভুগে থাকে । বেশিরভাগ মাথাব্যথা আপনা আপনিই(একটু সময় নিয়ে) অথবা হালকা ব্যথা উপশমের মাধ্যমে সেরে যায়। যদিও বেশিরভাগ মাথাব্যথা হালকা এবং সাময়িক বিরক্তিকর, কিন্তু কিছু মানুষের মাথাব্যথা এতটাই গুরুতর দেখা দেয় যে, তাদের ব্যথা উপশমের জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতেই হয়।শিশুদেরও মাথাব্যথা হতে পারে, তারা 10 বছর বয়সে পৌঁছানোর কিছু আগে। প্রাপ্তবয়স্ক মহিলারা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের তুলনায় বেশি মাথাব্যথার সম্মুখীন হয় এবং তারা প্রায়ই মাসিক চক্রের সময় এ সমস্যার সম্মুখীন হন।মাথা ব্যথার কারণ অনেক কিছু হতে পারে। মাইগ্রেন যেমন একটি কারণ, তেমনি আরো অনেক কারণ রয়েছে। মাথা ব্যথার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণগুলো কী চলুন জেনে নেওয়া যাক।
>দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার বা মোবাইলের ব্যবহার
> মদ্যপান বা ব্ল্যাক কফি পান
> ঠাণ্ডা খাবার থেকে মাথার যন্ত্রণা
> ঘুমের সময় পরিবর্তন
> রাতে ঘুমানোর সময় ভুলবশত ঘাড়ে চাপ লাগা এবং এ থেকে মাথা ব্যথা।
> অনেক সময় খালি পেটে থাকা
> অতিরিক্ত মানসিক চাপ
> হঠাৎ করে অ্যালার্জি সৃষ্টি হওয়া
> ধূপ বা কোনো সুগন্ধির কড়া গন্ধ
> কোনো রাসায়নিকের গন্ধ
>খুব টাইট করে চুল বেঁধে রাখা
মাইগ্রেনের সমস্যা নেই, অথচ নিয়মিত মাথা ব্যথা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কী করবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক।
> পর্যাপ্ত পানি পান করুন
> কখনো খালি পেটে থাকবেন না
> খুব কড়া গন্ধ, যেখান থেকে মাথা ব্যথা হতে পারে সেখান থেকে দূরে থাকুন।
> মোবাইল বা কম্পিউটারের পর্দা থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিন
> হালকা শরীরচর্চা করুন
এসবেও মাথা ব্যথা না কমলে নিচে কিছু বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথার ওষুধের নাম দেওয়া হল :মাথাব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল ইত্যাদি সেবন করা যেতে পারে। ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে অবশ্যই পেপটিক আলসাররোধী ওষুধ খেতে হবে। অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ সমস্যাকে বলে মেডিসিন ওভার ইউজ হেডেক। তাই খুব প্রয়োজন না হলে ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ না খাওয়াই ভালো।নিচে মাথাব্যথার কিছু ওষুধের নাম দেওয়া হলো
Paracetamol+caffeine :এটি প্যারাসিটামল ও ক্যাফেইন এর সমন্বিত ওষুধ। প্যারাসিটামলের ব্যথানাশক ও জ্বর উপশমক গুণাবলী সাথে কিছুটা প্রদাহরোধী কার্যকারিতা ও রয়েছে। ক্যাফেইন হচ্ছে এক ধরনের অ্যালকালয়েড যা থিওফাইলিন সদৃশ জ্যানথিন যৌগ। প্যারাসিটামলের সাথে সংযুক্তির মাধ্যমে ক্যাফেইন প্যারাসিটামলের দ্রবণীয়তা ও আন্ত মেমব্রেন ভেদ্যতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও ক্যাফেইন পেইন থ্রেশোল্ড ও পেইন নমনীয়তা বৃদ্ধি করে। ক্যাফেইন মস্তিষ্কের ভেসেল টোন বৃদ্ধি করে যা মাইগ্রেন ও মাথা ব্যথার উপশমের জন্য সহায়ক । নিচে কয়েকটি প্যারাসিটামল ও ক্যাফেইন সমন্বিত এই গ্রুপের কয়েকটি ওষুধের নাম দেওয়া হল,
Napa Extra
Ace Plus
Reset Plus
Cafedon
Cafenol
Caffo
Clofamol Extra
Fap Plus
Feverex
Tolfenamic acid :টলফেনামিক এসিড বিশেষভাবে মাইগ্রেন জনিত মাথাব্যথা, পােস্ট-অপারেটিভ ব্যথায় বেদনানাশক ও জ্বরে বেদনানাশক হিসাবে নির্দেশিত।
টলফেনামিক এসিড গ্রহণমাত্রা :টলফেনামিক এসিড প্রাপ্তবয়স্কদের তীব্র মাইগ্রেনের ব্যথায় ২০০ মিলিগ্রাম এবং হালকা থেকে মধ্যম ব্যথায় ১০০-২০০ মিলিগ্রাম দিনে তিনবার।টলফেনামিক এসিড ব্যবহার থেকে বিরত থাকা শ্রেয়। শিশু শিশুদের জন্য সঠিক গ্রহণমাত্রা এখনাে তৈরি হয়নি। টলফেনামিক এসিড ভরা পেটে গ্রহণ করা উচিত। নিচে টলফেনামিক গ্রুপের আরো কয়েকটি ওষুধের নাম দেওয়া হল,
Loragin
Anilic
Migesic
Migratol
Migrex
Tolfem
Tolfort
Tolmic
Tufnil
Namitol
Naproxen :
ন্যাপ্রোক্সেন একটি প্রদাহরোধী বা ব্যথানাশক ওষুধ । এটি প্রদাহরোধী , জ্বর নিবারণ ও ব্যথা প্রশমন করে। নিচে এই গ্রুপের আরো কয়েকটি ওষুধের নাম দেওয়া হল,,
Anaflex
Diproxen
Napro
apro-A
naproxen
Naprox
Napryn
Naspro
Nuprafen
মাথা ব্যথার ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন সেবন করা উচিৎ নয়। চিকিৎসকের পরামর্শে দীর্ঘমেয়াদি কিছু ওষুধ সেবনে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।ডক্তারের নির্দেশ মতো ওষুধ সেবন করুন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। ধন্যবাদ ।